ফেসবুকে পরিচয়, তারপর পরিণয় অবশেষ স্বামী ও সন্তান রেখে উধাও

সাইফ মিশু…

প্রথমে ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের পরিচয়। এর পর একে অপরের সাথে সরাসরি দেখা। এভাবে দু’জনের মধ্যে গড়ে ওঠে সম্পর্ক। তারপর পরিণয়। দীর্ঘ সময় বিয়ের বিষয়টি গোপন রেখে পরে প্রথম স্বামী ও একটি কন্যাসন্তান রেখে দ্বিতীয় স্বামীর সাথে উধাও হন স্ত্রী। এই ঘটনায় চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম তৃতীয় আদালতে নিজের স্ত্রী ও প্রেমিকের নামে মামলা করেছেন মিরসরাই উপজেলার কাটাছড়া ইউনিয়নের বামনসুন্দর এলাকার মফিজুর রহমানের ছেলে মো: হাসান আরিফ।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, প্রথম বিয়ে বহাল থাকা অবস্থায় ফেসবুকে পরকীয়া প্রেমিককে বিয়ে করার অভিযোগে গৃহবধূ ফাহিমা আক্তারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন প্রথম স্বামী। বিয়ে বহাল থাকা অবস্থায় স্ত্রীর দ্বিতীয় বিয়ের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমতির জন্য গত ৪ এপ্রিল হাসান আরিফ আদালতে দরখাস্ত দাখিল করেন। এরপর আদালতে জবানবন্দী দেন প্রথম স্বামী। অভিযোগটি আমলে নিয়ে স্ত্রীর বিরুদ্ধে সমন জারি করেন মহানগর হাকিম আদালত-৩য় চট্টগ্রামের ম্যাজিস্ট্রেট। আগামী ১১ জুলাইয়ের মধ্যে অভিযুক্ত স্ত্রীকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন ম্যাজিস্ট্রেট।

বাদির আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বরকত উল্লাহ খান জানান, আসামি প্রথম স্বামীর সাথে বিয়ে বহাল থাকাবস্থায় দ্বিতীয় বিয়ে করায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের দ্বিতীয় বিবাহের কাবিননামা আদালতে দাখিল করা হয়েছে। আদালত বাদির জবানবন্দী গ্রহণ করে মামলাটি আমলে নিয়েছেন। আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৪৯৪ ধারায় সমনজারি করেছেন আদালত।

জানা গেছে, ২০০৭ সালের ১৯ অক্টোবর ঝালকাঠি জেলার রাজারপুর উপজেলার সাউদপুর গ্রামের মৃত রফিকুল ইসলামের মেয়ে ফাহিমা আক্তারের সাথে এক লাখ টাকার কাবিননামায় মিরসরাই উপজেলার কাটাছড়া ইউনিয়নের বামনসুন্দর এলাকার মো: হাসান আরিফের বিয়ে হয়। এরপর তাদের সংসারে এক কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করে। বর্তমানে বয়স ৭ বছর। তার সাথে বিয়ে বলবৎ থাকা অবস্থায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে পরকীয়া প্রেমে পড়েন ফাহিমা। সে অনুযায়ী ২০১৫ সালের ১৪ নভেম্বর ঢাকার আলগিজার নবাবগঞ্জের বাসিন্দা নুরুল ইসলামে ছেলে মো: মামুনের সাথে বিয়ে হয়। দ্বিতীয় বিয়ে হওয়ার পরও ফাহিমা পূর্বের স্বামীর সাথে চলতি বছরের ২৫ মার্চ পর্যন্ত সংসার করে। প্রথম স্বামী আরিফ তখনো তার ২য় বিয়ের বিষয়টি জানতেন না।

হাসান আরিফ বলেন, আমি একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করি। আমাদের এক মেয়েকে নিয়ে অনেক সুখের সংসার ছিল। আমি মাঝে মধ্যে তার আচারণগত কিছু পরিবর্তন লক্ষ করেছি। তবে দ্বিতীয় বিয়ের মতো এমন কাজ করবে এমনটি আমি কখনো ভাবিনি।
জানা গেছে, গত ২৫ মার্চ বেলা ২টায় একমাত্র মেয়েকে বাসায় রেখে স্বর্ণালঙ্কার ও ৬৫ হাজার টাকা নিয়ে ফাহিমা পালিয়ে যান। এর পরপরই প্রথম স্বামী আরিফ বাদি হয়ে চান্দগাঁও থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। ২৬ মার্চ ফাহিমা আরিফের মোবাইলে ফোন করে তার পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি বিদেশ চলে যাবে বলে অবহিত করেন। এই বিষয়ে প্রথম স্বামী বাড়াবাড়ি করলে প্রাণনাশের হুমকি ও নারী নির্যাতন মামলা করার হুমকি দেন ফাহিমা।

মামলার বাদি হাসান আরিফ বলেন, ফাহিমা আমার সুখের সংসার তছনছ করে দিয়েছে। সে, আমি ও আমার মেয়ের ওপর জুলম করেছে। আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

Share

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*